৳ ৫০০ ৳ ৪২৫
|
১৫% ছাড়
|
Quantity |
|
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER
লেখকের কথাঃ
দেখতে দেখতে অনেকগুলাে দিন পার হয়ে গেল। সময় বহমান নদীর মতােই। সেই সময় নদীর প্রবহমানতার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিতে জমতে থাকে পলি। তখন ক্রমশ তার ঝাপসা হওয়ার পালা। কিন্তু সেই স্মৃতি, সেই দুঃসহ দিনের এবং তাকে জয়ের, সেই স্মৃতি তাে আমার ও আমাদের সকলের জীবনের এক গৌরবের সমাচার।একাত্তরের সেই ভয়াবহ দিনগুলােয় যুদ্ধের তাণ্ডবের ভেতরেই যে লেখা শুরু করেছিলাম, তা আর শেষ করতে পারি নি। যুদ্ধের পরের বছরগুলােয় একটু একটু করে এগােলেও তখন মনে হতাে, আমি আবেগমুক্ত বা নির্মোহ হতে পারছি না। আবেগমথিত স্মৃতিচারণে, জানি, প্রকৃত সত্য আর তথ্য বিকৃত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সুবিচার করা যায় না সর্বাংশে বর্ণিত চরিত্র ও ঘটনার বেলায়। তাই সময়ের ব্যবধান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের এই ব্যবধান সাহায্য করে নিরপেক্ষ আর নির্মোহ হতে। কেননা, আবেগ তখন স্বাভাবিকভাবেই মরে যায়, আর তখন কলমের ডগায় উঠে আসে সঠিক আর নিরেট বাস্তবতা।। আমার নিজের মনে ছিল প্রচণ্ড তাড়না। তাগিদ ছিল আমার সহধর্মিণীর, যিনি যুদ্ধের বিভীষিকাময় দিনগুলােয় কাছাকাছি থেকে দেখেছেন আমাদের নিবিড়ভাবে। শহীদুল ইসলাম বাবলু, আমার সেদিনের যুদ্ধের সময়কার সাথি, তার অভিযােগ ছিল, আমাদের কথা তাে কেউ লিখলাে না। আপনি পারতেন। আপনিও লিখলেন। মেরুদণ্ডে গুলি খাওয়া হাসান, রংপুরের গঙ্গাচড়ার ছেলে, তারও অভিযােগ ছিল, তার কথা তাে কেউ লিখলাে না, পঞ্চগড়ের ছেলে জহিরুল, গ্রেনেডের আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল যার শরীর, কিছুদিন আগে সে তীব্র অভিমানহত হয়ে বলেছিল, সবকিছু ব্যর্থ হয়ে গেল। আমাদের কথা কেউ কি লিখবে না তাহলে? পিন্টু, বকর, মুসা, আহিদার, একরামুল, শম্ভ, চৌধুরী, মতিয়ার, খলিল, মধুসূদন, জয়নাল, মঞ্জু, মালেকসহ আমার সেদিনকার প্রায় সব সাথির কাছ থেকে এই একই ধরনের অভিযােগ, আমাদের কথা কেউ লিখলাে না। গােলাম গউস, আক্কাস, মতিয়ার, খালেক এরা আজ বেঁচে থাকলে হয়তাে আজকের বাংলাদেশে আমাদের মতােই ভালােমন্দে জীবনধারণ করতাে, জীবনের দুর্বিষহতার ভার বয়ে বেড়াতে তাদের হয়তাে কষ্ট হতাে, সবকিছু মিলিয়ে আমাদের মতাে হয়তাে তারা মুক্ত আকাশের নিচে নিজের মতাে করে বাস করতাে। কিন্তু এখন ছায়া মিছিলের মতাে তারা আমাদের কাছে আসে। তাদের কোনােরকম দাৰি নেই। সকল দাবি উদ্ধে তারা আজ। সীমান্তের আশপাশে মাটির নিচে তাদের শুইয়ে রাখা হয়েছে নামঠিকানাবিহীন সমাধিক্ষেত্রে। কিন্তু তাদের কাছে দেয়া আমাদের সেদিনকার অঙ্গীকার, আমরা কোনােদিন ভুলবাে না তােমাদের, দেশ তােমাদের ভুলবে না কোনােদিন, এ কথাগুলাে কুরে কুরে খায় আমাকে।।
অনেক দেরি হয়ে গেছে, সবকিছু ধীরে ধীরে আবছা হয়ে আসছে দিনের পর দিন। সেদিনকার তরুণ-যুবক আমরা আজ মধ্য বয়সে উপনীত। সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এখন মনের মধ্যে কেবল তাগিদের পর তাগিদের তােলপাড়, যা লিখবার তাড়াতাড়ি লিখে ফেলল। বড় ভাই নুরুল হক, যুদ্ধের পর খুবই হতাশ ছিলেন। যুদ্ধের পরপরই তিনি বলেছিলেন, “দেখাে, কিছু হবে না, কিছুই হবে না ...।' তিনি তখন ঠাকুরগাঁওয়ে তার ফেলে যাওয়া চাকরিতে আবার যােগদান করেছেন। তার হারিয়ে যাওয়া স্ত্রী আর সন্তানদের পেয়েছেন ফিরে। কিন্তু তারপরও হারিয়ে যাওয়া যুদ্ধের দিনগুলােয় ফিরে যাওয়ার জন্য তাঁর অস্থিরতা আর আকুলতার অন্ত ছিল না।
Title | : | গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে - প্রথম খন্ড |
Author | : | মাহবুব আলম |
Publisher | : | সাহিত্য প্রকাশ |
ISBN | : | 9787012401125 |
Edition | : | 2012 |
Number of Pages | : | 428 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
If you found any incorrect information please report us